মাছের উকুন রোগের লক্ষণ প্রতিরোধ ও প্রতিকার

মাছের উকুন রোগের লক্ষণ প্রতিরোধ ও প্রতিকার



 উকুন রোগের লক্ষণ ঃ 

মাছের উকুন রোগ শনাক্ত করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ রয়েছে ঃ

মাছের শরীরে উকুনের উপস্থিতি ঃ মাছের শরীরে ক্ষুদ্র সাদা বা স্বচ্ছ বিন্দুর মত উকুন দেখা যায় । 

মাছের যন্ত্রণা ও চুলকানি ঃ

আক্রান্ত মাছ উকুনের কারণে অস্বস্তি অনুভব করে, ফলে তারা পানিতে আরো বেশি ঘোরাফেরা করে ।

মাছের ত্বকের ক্ষতি ঃ

উকুন মাছের ত্বকে আক্রমণ করলে ক্ষত বা দাগ দেখা যায় ।

মাছের শ্বাস নিতে সমস্যা ঃ

উকুনের সংক্রমণে মাছের ফুলকা প্রভাবিত হতে পারে যার ফলে শ্বাস নিতে সমস্যা হয়।

মাছের খাবার গ্রহণের সমস্যা ঃ আক্রান্ত মাছ খাবার কম খেতে শুরু করে এবং দুর্বল হয়ে পড়ে।

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ ঃ

মাছের উকুন রোগ প্রতিরোধে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে ঃ

পুকুরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঃ পুকুরের পানি এবং পরিবেশ পরিষ্কার রাখা উচিত । নিয়মিত পানি পরিবর্তন এবং পুকুরের মল ও আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। 

মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ঃ নিয়মিত মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে । যদি কোন লক্ষণ দেখা যায় তবে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে । 

মাছের খাদ্য ঃ উচ্চমানের এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। সুস্থ পরিবেশ মাছের উকুন রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে । 

পানির গুণগতমান ঃ pH, অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া এবং তাপমাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। সুস্থ পরিবেশে মাছের রোগ প্রতিরোধ সহায়ক । 

মাছের উকুন রোগের প্রতিকার ঃ

যদি মাছের মধ্যে কোন রোগ দেখা দেয়,তবে কিছু প্রতিকার অবলম্বন করা যেতে পারে যেমন ঃ

আলফা মেলথিন ব্যবহার ঃ

এটি একটি পরিচিত এন্টিপ্যারাসিটিক, যার কোন নির্মূল করতে কার্যকর । মৎস্য বিশেষজ্ঞের নির্দেশ অনুযায়ী পরিমাণ মতো ব্যবহার করতে হবে ।

এস্পম সল্ট ঃ ২-৩% এস্পম সল্ট পানিতে মিশিয়ে মাছের জন্য পুকুরে প্রয়োগ করতে পারেন । মাছের ত্বক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে । 

আইভারমেকটিন ব্যবহার ঃ আইভারমেকটি একটি অ্যান্টি প্যারাসাইটিক ড্রাগ, যা সাধারণত পশুপালন এবং মাছ চাষে ব্যবহৃত হয় । এটি সাধারনত বিভিন্ন ধরনের পরজীবী নির্মূল করতে সাহায্য করে । মাছ চাষে এটি ব্যবহারের কিছু নিয়ম ও উপকারিতা রয়েছে , মাছের প্রজাতি এবং বয়স অনুযায়ী ৩% আয়ভারমেকটিন  ব্যবহারের জন্য সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত সাধারণত প্রতি বিঘা ৬ ফিট গভীর পানির জন্য ৭০-৮০ ml ৩% আইভারমেকটিন ব্যাবহার করতে হবে। 

প্রাকৃতিক প্রতিকার ঃ কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যেমন নিম তেল বা তেল জাতীয় দ্রব্যও উকুন প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে । 

শেষ কথা ঃ মাছের উকুন রোধে একটি গুরুতর সমস্যা হলেও সঠিক পরিচর্যা ও ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করলে প্রতিরোধ করা সম্ভব। মাছের স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রাখা এবং নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করা গেলে দ্রুত প্রতিকার করা সম্ভব । মোট কথা, মাছের উকুন রোগ সম্পর্কে সচেতনতা এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে মাছের স্বাস্থ্য ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url