গর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে সন্তান বুদ্ধিমান ও মেধাবী হবে
গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ সন্তানের শারীরিক এবং মানসিক
বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সন্তান যেন বুদ্ধিমান ও মেধাবী হয় এ
প্রত্যাশা সব বাবা-মায়েরই থাকে। এ কারণেই গর্ভবতী নারী শিশুর কথা চিন্তা করে
স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে চলেন। পুষ্টিকর খাবারের অভাবে
শিশুর মানসিক বিকাশ বাধা গ্রস্থ হতে পারে।
যেহেতু বুদ্ধিমানও মেধাবী সন্তান চান বাবা মায়েরা কাজেই, তার মস্তিষ্ক গঠনের
উপর জোর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথম দুই বছর সন্তানের জন্য দরকার মস্তিষ্কে
সঠিক বিকাশ এর জন্য গর্ভাঅবস্থায় যে খাবারগুলো খেতে হবে তা নিয়ে আজকে
বিস্তারিত আলোচনা করব।
পেইজ সূচিপত্রঃ
- গর্ভাবস্থায় কেন পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খাবেন
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি-অ্যাসিড
- গর্ভাবস্থায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান
- গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ফলিক এসিড গ্রহণ করুন
- ফল ও শাকসবজি
- গর্ভাবস্থায় ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন
- গর্ভাবস্থায় জিংক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন
- গর্ভাবস্থায় সঠিক খাদ্যভাসের আমার কিছু পরামর্শ
- শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় কেন পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খাবেন
সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশ মায়ের গর্ভাবস্থায় শুরু হয়। সেজন্য এই
সময় দরকার মায়ের একটি ব্যালেন্স ও মডিফাইড ডায়েট। সবকিছু অতিরিক্ত না
খেয়ে কি খেলে বাচ্চার ব্রেন ডেভেলপমেন্ট হবে সেটা খেতে হবে। সাধারণত
মায়ের গর্ভাঅবস্থায় বাচ্চার 25% ব্রেন ডেভেলপমেন্ট ঘটে। তাই গর্ভ অবস্থায়
মা কি খাবে তার একটা নির্দিষ্ট তালিকা আগে থেকেই প্রস্তুত করে রাখতে হবে।
আমাদের পরিবেশ ও খাদ্যভাসের পরিবর্তনের কারণে অভিভাবকরা প্রায় তাদের বাচ্চাদের নিয়ে চিন্তিত থাকেন কিভাবে তাদের বাচ্চা বুদ্ধিমান হবে। প্রথমত চিন্তা করতে হবে গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য তালিকা কেমন ছিল কারণ গর্ভের সময় মস্তিষ্কের ২৫ ভাগ ডেভেলপ হয়ে যায়। চলুন এখন খাবারে তালিকা গুলো দেখি নিই।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি-অ্যাসিড
ওমেগা-৩ ফ্যাটি-অ্যাসিড, গর্ভের শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি স্নায়ুতন্ত্রের বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের
গঠন উন্নত করে তুলতে সহায়তা করে। সাধারণত গর্ভধারণের চতুর্থ মাস থেকে
ওমেগা-৩ খাবার খাদ্য তালিকায় বেশি রাখতে হবে, কুমড়ার বিচি, ও সূর্যমুখীর
বিচি, সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যালমন ,ম্যাকেরেল,কডলিভার অয়েল প্রচুর এবং
ওমেগা-৩ থাকে সামুদ্রিক মাছে DHAএবং EPA থাকে, যা পরবর্তী সময়ে শিশুর
বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান
গর্ভাবস্থায় প্রোটিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। মায়ের
শরীরের কোষ গঠনের পাশাপাশি সন্তানের বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের বিকাশের সহায়ক।
গর্ভাঅবস্থায় মায়েদের জন্য প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা বেশি তাই প্রোটিন
সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খাদ্য তালিকা রাখা উচিত, যেমন-ডিম, বিশেষ করে ডিমে
কুসুম, প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। এতে উচ্চমানের প্রোটিন এবং অন্যান্য
প্রয়োজনে ভিটামিন ও খনিজ থাকে।
মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে এবং এটি সহজেই হজম হয়। গর্ব
অবস্থায় এটি একটি ভালো প্রোটিনের উৎস। মাছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে
যা, সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশের সহায়ক। দুধ,দুই,পনির এবং ছাড়াতে প্রচুর
প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম থাকে। যা মায়ের ও সন্তানের হাড়ের গঠনেও সহায়তা
করে।
গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ফলিক এসিড গ্রহণ করুন
আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়ক, যা শরীরের কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে।
গর্ভাঅবস্থায় আয়রনের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায় কারণ এ সময় মায়ের শরীরের
অতিরিক্ত রক্ত তৈরি হয় এবং গর্ভস্থ শিশুর অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে হয়।
গরু ও খাসির মাংস, মুরগির কলিজা, মসুর ডাল, পালং শাক, কিসমিস, খেজুর এ
প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে।
ফলিক এসিড, যা ভিটামিন B9 নামেও পরিচিত, মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কোডের সঠিক
বিকাশের সহায়ক। এটি জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করে এবং শিশুর নিউড়াল টিউবের সঠিক
গঠনে ভূমিকা রাখে। পালং শাক, ব্রুকলি, মটরশুটি, কমলালেবু, লেবু, আঙ্গুর, ড্রাগন
ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড থাকে। মায়ের শরীরে আয়রনের অভাব হলে
রক্তস্বল্পতা হতে পারে, যা মায়ের ক্লান্তি, শারীরিক দুর্বলতা এবং শিশুর
অপর্যাপ্ত ওজনের ঝুঁকি বাড়ায়। ফলিক এসিডের অভাব নিউরাল টিউব ডিফেক্ট এর ঝুঁকি
বাড়াই, যা শিশুর মস্তিষ্ক ও ফাইনাল কোড এ প্রভাব ফেলতে পারে। আইরন ও ফলিক এসিড
মায়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং শিশুর সঠিক বিকাশ নিশ্চিত করতে সহায়ক।
ফল ও শাকসবজি
গর্ভাবস্থায় ফল ও শাকসবজি খান। মায়ের স্বাস্থ্যের সব ধরনের ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট
হিসেবে শাকসবজি অতুলনীয়। লালশাক, পুঁইশাক, পালং শাক কচু শাক, এ ধরনের শাকসবজি
করব অবস্থায় খেলে আপনার বাচ্চা মেধাবী ও স্বাস্থ্যবান হবে।
গর্ভাবস্থায় ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন
গর্ভাবস্থায় সন্তানের বুদ্ধি ও মেধা বিকাশের জন্য ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
করার চেষ্টা করুন। কারণ ভিটামিন ডি শিশুর মস্তিষ্কের স্নায়ুর কার্যক্রম উন্নত
করে। সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় তবে কিছু খাবারেও ভিটামিন ডি আছে
যেমন ঃ দুধ, দই, ডিমের কুসুম এবং সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি
রয়েছে তাই গর্ভাঅবস্থায় ভিটামিন ডি এর জন্য উপরোক্ত খাবার গ্রহণ করুন।
গর্ভাবস্থায় জিংক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন
গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মায়ের জিংক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। কারণ জিংক
শিশুদের বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। জিংক সমৃদ্ধ খাবার গুলোর
মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কাঠবাদাম, কাজু, পেস্তা, ছোলা, মসুর ডাল ইত্যাদিতে প্রচুর
পরিমাণে জিংক পাওয়া যায়। তাই গর্ভাঅবস্থায় এই খাবারগুলো খাওয়ার চেষ্টা করুন।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার
সবুজ শাকসবজি বিশেষ করে পালং,শাক,বাঁধাকপি,ব্রকলি,গাজর,টমেটো,বিনস দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় রাখতে হবে।এগুলোর লুটেইন নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।বাদাম,কালোজাম খেতে পারেন গর্ভাবস্থায়। এগুলোর বিদ্যমান ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
আমন্ড
স্বাস্থ্যকর স্নেহ পদার্থ,ম্যাগনেসিয়াম ভিটামিন ই এবং প্রোটিনে পরিপূর্ণ হল আমন্ড।মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড আমান্ডে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় প্রতিদিন এক মুঠো করে আমার মতো খেলে আপনি সক্ষম হবেন। জন্ম মুহূর্ত থেকে বুদ্ধিমান একটি সন্তান প্রসব করতে গর্ভ অবস্থায় সন্তানের বুদ্ধি বিকাশের সহায়ক। গর্ভাবস্থায় মটরশুটি গ্ৰহন সন্তানের বুদ্ধি বিকাশে সহায়ক। আখরোটও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডে ভরপুর।
ডিম
ডিম অ্যামাইনো এসিড কোলিন সমৃদ্ধ, যাতে মস্তিষ্কের গঠন ভালো হয় ও স্মরণ শক্তি উন্নতি হয়। গর্ভবতী নারীদের দিনে অন্তত দুটো করে ডিম খাওয়া উচিত।যার থেকে কোলিনের প্রয়োজনের অর্ধেক পাওয়া যায়। ডিমে থাকা প্রোটিন ও লোহা জন্মের সময় ওজন বাড়িয়ে দেয়। কম ওজনের সাথে কম বুদ্ধি বা আই.কিউ-এর সাথে সম্পর্ক রাখা হয়।
দই
আপনার শরীর প্রচুর পরিশ্রম করে আপনার সন্তানের স্নায়ু কোষগুলো গঠনের জন্য।এর জন্য আপনার বাড়তি কিছু প্রোটিন লাগবে। আপনাকে প্রোটিন যুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে যেমন দই ছাড়া অন্য খাবার দইয়ে ক্যালসিয়াম আছে যা গর্ভঅবস্থায় দরকারি।
গর্ভাবস্থায় যে খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
গর্ব অবস্থায় মা দিন নির্দিষ্ট কিছু খাবার থেকে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।আর তা গর্ভধারণ সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি করে। গর্ভধারণ অবস্থায় আপনাকে যে সব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে চলুন এখন তা জেনে নিই-
কাঁচা পাস্তুরায়ন ছাড়া দুধ এবং ওই ধরনের দুধ থেকে তৈরি কোমল পনির।এগুলোতে লিস্টেরিয়া নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে যা লিস্টিওসিস নামের এক ধরনের রোগ তৈরি করে।
মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার কারণ সেগুলোতে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে।
কাঁচা ও পুরোপুরি রান্না না হওয়া মাংস জাত পণ্য যেমন কোল্ড কাট ও সসেজ। এগুলোতে টকসোপ্লাজমা গণ্ডির মতো পরজীবী এবং সালমানিলাও লিস্টেরিয়ার মতো ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে।
সালমনীলা ও সিফুড। কারণ এগুলোতে উচ্চমাত্রার ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী থাকতে পারে।
কিছু মাছে উচ্চমাত্রায় পারদ থাকে এবং এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।বেশিরভাগ শিকারি মাছ যেমন হাঙ্গর,শরফ,কিং ম্যাককেরেলে ও মারলিং এ মার্কারি বেশি থাকে।
স্মোকড কিন্তু রান্না না করা মাছ যেমন স্মোকড স্যালমন। রান্না না করা অঙ্কুরিত বিজ,খাদ্য শস্য ও সিম।
কাঁচা,মুলা ও আলফার বীজ এবং রেডি টুইট সালাদ এসব খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ এগুলোতে লিস্টেরিয়া থাকে। এগুলোতে লিস্টোরিয়া ও সালমনীলা ও কলির মতো ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে।
কাচা বা সিদ্ধ ডিম। এতে সালমনিলা ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে।
লিভার ও অন্যান্য অঙ্গের মাংস লিভারের প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকলেও এটা গর্ভধারিনী নারীদের ক্ষেত্রে খেতে বলা হয় না।কারণ এতে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ থাকে এবং এই মাংসে বিষক্রিয়া ঝুঁকি থাকে।
গর্ভাবস্থায় কতটা বেশি খাওয়া দরকার
প্রথম তিন মাসে আপনার কোন বাড়তি খাবারের দরকার নেই। দ্বিতীয় তিন মাসে প্রতিদিন আপনার ৩৪০ ক্যালোরি বাড়তি দরকার হবে। আর শেষ তিন মাসে আপনার প্রতিদিন অতিরিক্ত ৪৫০ ক্যালরি দরকার হবে। এই অবস্থায় শক্তির জন্য হাতের কাছে স্বাস্থ্যকর হালকা খাবার যেমন বাদাম, দই ও তরতাজা ফলমূল রাখবেন। এ বিষয়ে উপযুক্ত পরিকল্পনা পেতে আপনার স্বাস্থ্য সেবা দাতার সঙ্গে কথা বলুন।
গর্ভাবস্থায় সঠিক খাদ্যভাসের আমার কিছু পরামর্শ
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া জরুরি,যা মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ উন্নত করে।
অতিরিক্ত ক্যাফিন শিশুর বুদ্ধিমতার বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে তাই ক্যাফিয়েন
এড়িয়ে চলুন। দৈনিক খাদ্য তালিকায় সুষম পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। অতিরিক্ত চিনি
ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানো, প্রক্রিয়াজাত খাবার শিশুর বুদ্ধিমত্তার ওপর
নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
শেষ কথা
গর্ভাবস্থায় মায়েদের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করার শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের
জন্য অপরিহার্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণায় বলেছে গর্ভাবস্থায় মায়ের
খাদ্যভ্যাস সন্তানের ভবিষ্যতের জ্ঞানীও সক্ষমতার ভিত্তি স্থাপন করে। মায়েদের
উচিত পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহণ করা, যা শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ও বিকাশে
সহায়ক।
তবে সব খাবার পরিমিত খাবেন কোন সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের আজ থেকে পরামর্শ
নিবেন। আমার পোস্টটা ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url