ফুসফুসের সমস্যার লক্ষণ কি কি
ফুসফুসের সমস্যার লক্ষণ কি কি
ফুসফুসের সমস্যার লক্ষণ গুলি বিভিন্ন হতে পারে এবং সমস্যার ধারণা তীব্রতার উপর নির্ভর করে ফুসফুসের সমস্যার লক্ষণ ও সমাধান নিচে আলোচনা করা হলো
ফুসফুস সমস্যার লক্ষণসমূহ
সূচিপত্র:
- শ্বাসকষ্ট
- দীর্ঘস্থায়ী কাশি
- বুকে ব্যথা
- শ্বাস নেয়ার সময় শব্দ হওয়া
- ক্লান্তি ও দুর্বলতা
- শ্বাসের গতি পরিবর্তন
১ শ্বাসকষ্ট ঃ
সাধারণত যে কোনো কাজকর্ম করতে গিয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় । শ্বাস নিতে গেলে
বেশি জোর লাগে । আপনার যদি ক্রমাগত শ্বাস নিতে সমস্যা হয় তাহলে কখনো এটি হালকা
ভাবে নেবেন না।
২ দীর্ঘস্থায়ী কাশি ঃ
দীর্ঘদিন ধরে কাশি থাকা বিশেষ করে তিন সপ্তাহর বেশি। কাশির সাথে সাদা হলুদ
সবুজ ও রক্তবমি মিশ্রিত কফ বের হওয়া । দীর্ঘস্থায়ী কাশি ফুসফুসের ক্ষতির প্রথম
লক্ষণ হতে পারে। এটা উপেক্ষা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৩ বুকে ব্যথা ঃ
গভীর শ্বাস নিতে গেলে বা কাশতে গেলে বুকে ব্যথা অনুভব করা। ব্যথাটি সাধারণত
তীক্ষ্ণ বা ছুরির মত হতে পারে। এ ব্যাথা যদি এক মাস বা তার বেশি সময় ধরে থাকে
বিশেষ করে আপনি যখন কাশি বা শ্বাস নিচ্ছেন এডি ফুসফুসের গুরুতরো লক্ষণ হতে পারে।
এসব লক্ষণ থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
৪ শ্বাস নেয়ার সময় শব্দ হওয়া ঃ
শ্বাস নেয়ার সময় সাঁ সাঁ শব্দ বা শো শো শব্দ হওয়ায় লক্ষণ কিন্তু মোটেও
সুবিধার নয়। ফুসফুসের শ্বাসনালী শোরু হয়ে যাওয়া লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট দেখা
দেয়। এমনটি থাকলে সতর্ক থাকুন,ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৫ ক্লান্তি ও দুর্বলতা ঃ
সব সময় ক্লান্ত বোধ করা বা সামান্য কাজ করলে শারীরিক ভাবেৎদুর্বলতা অনুভব
করা
৬ শ্বাসের গতি পরিবর্তন ঃ
শ্বাস দ্রুত বা ধীরে হওয়া এবং শ্বাসের ছন্দে পরিবর্তন দেখা দিলেই, বসে না থেকে
ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৭ ফুসফুস ভালো রাখার উপায় ঃ
ফুসফুস ভালো রাখতে কিছু সহজ এবং কার্যকর উপায় আছে, যা নিয়মিত আপনি
অনুসরণ করলে আপনার ফুসফুস সুস্থ থাকবে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
নিচে কিছু উপায় উল্লেখ করা হলো ঃ
১ ধূমপান ত্যাগ করা
ধূমপান ফুসফুসের জন্য সবচেয়েতে ক্ষতিকর। এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা কমিয়ে
দেয় এবং ক্যান্সার ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD) এবং অন্যান্য
শ্বাসযন্ত্রের রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এবং ধোয়া
সংস্পর্শে আসা থেকে বিরক্ত থাকা উচিত।
২ শারীরিক ব্যায়াম নিয়মিত
শারীরিক ব্যায়াম করলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় যেমন হাঁটা,
দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, যোগব্যায়াম এবং শ্বাস ব্যায়াম ফুসফুসের জন্য উপকারী।
অ্যারবিক ব্যায়াম বা কার্ডিও এক্সারসাইজ করলে ফুসফুসের ক্যাপাসিটি বাড়ে এবং
শ্বাসের গতি উন্নত হয়।
৩ দূষণমুক্ত পরিবেশ
বাতাসে দূষণ ফুসফুসের ক্ষতি করে, তাই ফুসফুস ভালো রাখতে দুষন এলাকা থেকে
দূরে থাকা উচিত ঘরে বা কর্মস্থলে বায়ু পরিষ্কার রাখতে এয়ার পারফিউমার ব্যবহার
করতে পারেন।
৪ শ্বাস ব্যায়াম নিয়মিত
শ্বাসের ব্যায়াম করলে ফুসফুসের কার্যকারিতা ও ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পায়। লম্বা
শ্বাস নেওয়া ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়া এবং গভীর শ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে ফুসফুসের
কর্মক্ষমতা বাড়ানো যায়।
৫ স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ফুসফুস ভালো রাখতে ফলমূল,শাক সবজি এবং প্রটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। ভিটামিন
ই,সি,ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার জন্য বেশ উপকারী।
৬ রোগ প্রতিরোধক টিকা
ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নিউমোনিয়ার মত রোগ থেকে ফুসফুস রক্ষা করতে টিকা নেওয়া
উচিত। নিয়মিত চেকআপ এবং টিকা গ্রহণ করে ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো
যায়।
৭ মানসিক চাপ কমানো
মানসিক চাপ বা ট্রেস শ্বাস যন্ত্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে তাই নিয়মিত
মেডিটেশন বা রিলাক্সেন টেকনিক অনুশীলন করা উচিত।
শেষ কথা ঃ
আমাদের শরীরের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ফুসফুস। ফুসফুস বাতাস থেকে
অক্সিজেন টেনে রক্ত প্রবাহে পরিবহন করে। একই সময়ে তারা শরীরে অভন্তররে উৎপন্ন
কার্বন ডাই অক্সাইডকে শরীর থেকে বের করে দিতে সহায়তা করে। রক্তে অক্সিজেন বহন
করা ছাড়াও ফুসফুসের আরো অনেক কাজ আছে। আমাদের শরীরের খুব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ
হওয়ায় ফুসফুসের যত্ন নেওয়া দিকে আমাদের মনযোগী হওয়া উচিত।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url