সোনা পাতা খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন

সোনা পাতা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি এবংচিনি।কিন্তু অনেকেই এর উপকারিতা,অপকারিতা খাবার নিয়ম সম্পর্কে জানি না। তাহলে চলুন জেনে নেই এর উপকারিতা অপকারিতা এবং খাবার নিয়ম সম্পর্কে।
সোনা পাতা খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন
সোনা পাতা শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ সারাতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আজকের আর্টিকেলটি পড়লে সোনা পাতার উপকারিতা,অপকারিতা এবং খাবার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন।

পেজ সূচিপত্রঃ সোনা পাতা খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন


সোনা পাতার উপকারিতা

সোনা পাতা খাবার অনেক উপকারিতা রয়েছে। বিশেষত এটি শারীরিক,মানসিক এবং সৌন্দর্যচর্চায় ব্যবহৃত হয়। বিশ্ব আয়ুর্বেদিক গবেষণা ইনস্টিটিউট সোনা পাতাকে কে অত্যন্ত শক্তিশালী ভেসজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সারা বিশ্বে কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণের জন্য সোনা পাতার ব্যবহার অপরিহার্য।

এছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সোনা পাতাকে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার প্রাথমিক ওষুধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কোষ্ঠকাঠিন্যের মহা ঔষধ হিসেবে সোনাপাতা কাজ করে থাকে। তো বন্ধুরা এবার চলুন জেনে নেই সোনা পাতার উপকারিতা সমূহ ঃ
  • শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে ঃ সোনা পাতার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। সোনা পাতার মধ্যে অনেক খনিজ পদার্থ রয়েছে যা শরীরের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে শরীর এর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গুলিকে শক্তিশালী করে এবং শক্তির স্তর বৃদ্ধি করে এটি শরীরে ধীরে ধীরে দুর্বলতা দূর করে বিশেষ করে যদি আপন দীর্ঘ সময় ধরে কোন রোগে ভুগে থাকেন।
  • ত্বক এবং সৌন্দর্য চর্চায়ঃ সোনা পাতা ত্বক এবং সৌন্দর্য চর্চায় বহুল ব্যবহৃত হয়। সোনা পাতা ত্বকের গঠন এবং মোলায়েমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা ত্বকের কোষ পূর্ণ গঠন এবং ড্যামেজ রিপেয়ার করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ফেসিয়াল মাধুরি ক্রিম ও মাস্ক তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়।
  • হজম ক্ষমতা বাড়াতে ঃ সোনা পাতার আরেকটি চমৎকার উপকার হচ্ছে এটি হজম ব্যবস্থা কে ভালো রাখতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। এটি শরীরের বিভাগীয় প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং খাবারের মাধ্যমে প্রবাহিত পুষ্টির শোষণ ক্ষমতা বাড়ায়। সোনা পাতার মধ্যে থাকা উপাদান গুলি খাদ্য শোষণের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং শরীরের পুষ্টি প্রয়োজনয়তা পূরণে সহায়ক।
  • এন্টি এজিং গুনাবলি সমৃদ্ধ ঃ সোনা পাতার মধ্যে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান গুলো ত্বকে বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে,এটি ত্বকের কোষের পূর্ণ গঠন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে,এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।সোনা পাতা প্রাকৃতিক গুণাবলী ত্বকের বলিরেখা এবং বয়স জনিত ত্বকের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ঃ প্রাচীনকাল থেকেই সোনা পাতাকে কোষ্ঠকাঠিন্যের মহা ওষুধ বলা আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে। কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সোনা পাতার ব্যাপক উপকারে আসে। সোনার পাতা আমাদের শরীরে অনেক উপকারে আসে সোনা পাতা প্রাকৃতিক আয়ুর্বেদিক একটি মহা ঔষধ।

সোনা পাতা গুঁড়ার দাম

কমবেশি আমরা সবাই সোনা পাতা গুরা খেয়ে থাকি। তাহলে চলুন এবার সোনা পাতা গুঁড়ার দাম সম্পর্কে জেনে নেই। সোনা পাতা সাধারণত আমাদের দেশের গ্রাম অঞ্চলের রাস্তাঘাটে এবং পুকুরপাড়ে আশেপাশে বেশি দেখা যায়।আমাদের দেশে সোনা পাতা বাণিজ্যিকভাবে চাষ না হলেও সোনা পাতা গুড়ার দাম অনেক এবং চাহিদাও রয়েছে।
সোনা পাতা খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে এক কেজি সোনা পাতা গুঁড়া কিনতে হলে আপনাকে ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকা গুনতে হতে পারে। এছাড়াও কোন কোন অঞ্চলে এর দাম ২০০০ টাকারও বেশি হতে পারে। কবিরাজের দোকানে অথবা বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবসাইট রয়েছে যারা অনলাইনে মাধ্যমে সোনা পাতা গুড়ো বিক্রি করে থাকে ক্রয় করার সময় অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে ক্রয় করবেন। সবথেকে বেশি ভালো হয় যদি আপনি নিজেই সোনা পাতা সংগ্রহ করে ভালোভাবে পরিষ্কার করে রোদে শুকিয়ে গুড়া করে সংরক্ষণ করতে পারেন। চলুন এবার সোনা পাতা গুঁড়ো খাওয়ার নিয়ম জেনে নেই। 

সোনা পাতা গুড়া খাওয়ার নিয়ম 

সোনা পাতার গুড়ো খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন। চলুন তাহলে দেরি না করে সোনা পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন। সোনা পাতা প্রাকৃতিক একটি উপাদান তাই সোনা পাতা প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করে খাওয়াটাই উত্তম।

আরো পড়ুন ঃগর্ভাবস্থায় কি খাবার খেলে সন্তান বুদ্ধিমান ও মেধাবী হব

তবে তা যদি সম্ভব না হয় তবে আপনি চেষ্টা করবেন প্রাকৃতিক উপায়ে যারা সেনা পাতার গুঁড়া তৈরি করে তাদের থেকে সংগ্রহ করার। প্রাকৃতিক সোনা পাতা খাওয়া কার্যকরী দিক থেকে অধিক উত্তম। 
  • গড়ে প্রতিদিন আপনি ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম সোনা পাতা গুঁড়ো খেতে পারেন। ফলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
  • যদি সোনা পাতার ট্যাবলেট খেতে চান তাহলে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অবশ্যই 13 মিলিগ্রামের আশেপাশে এবং শিশুদের জন্য এই ট্যাবলেট দিনে যে কোন দুই বেলা খাওয়াতে পারেন। 
  • দানাদার খাবারের সাথে প্রায় ২০ মিলিগ্রাম পরিমাণ খেতে পারেন প্রাপ্তবয়স্করা।
  • আর যদি পানির সাথে বা চায়ের সাথে খেতে চান তবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১০ মিলিগ্রাম এবং বাচ্চাদের জন্য এক চামচ পরিমাণ খেতে পারেন। 
এক কাপ কুসুম গরম পানির মধ্যে হাফ চা চামচ সোনা পাতা গুড়া মিশিয়ে পাঁচ মিনিট পরে ভালোভাবে নেড়ে খেয়ে নিবেন। এছাড়াও সোনা পাতা দিয়ে চা তৈরি করেও খেতে পারেন। আপনি যেভাবেই কেন না খান সোনা পাতার উপকারিতা পাবেন। তবে আমার পরামর্শ এই যে এভাবে সোনা পাতা গুঁড়া হিসেবে খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

সোনা পাতা চেনার উপায় 

সোনা পাতার গুড়া আমরা অনেকেই খেয়ে থাকি কিন্তু আমরা আসলে সোনা পাতা চিনি না। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে আমরা সোনা পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে জেনে নেই। সোনা পাতা দেখতে অনেকটা মেহেদি পাতার মত। সোনা পাতা দেখতে কাঁচা অবস্থায় হলুদাভাব সবুজ রঙের হয়ে থাকে আর শুকালে অনেকটা হলুদাভাব সোনালী বর্ণের হয়।
সোনা পাতা চেনার উপায়
সোনা পাতা গাছের মাথায় হলুদ রঙের ফুল ফোটে তবে অনেক সময় দেখা যায় এই ভুল সাদা ও গোলাপি রঙেরও হয়ে থাকে। এই গাছের ফল দেখতে অনেকটা সিমের মত হয়ে থাকে। সিমের ডিসির মত এর ভিতরে সোনা পাতার বীজ আড়াআড়ি ভাবে থাকে।

যে সকল দেশ উষ্ণপ্রধান সে সকল দেশের বেশি সোনা পাতার গাছ জন্মায়। বন্ধুরা আশা করছি এই আর্টিকেল পড়ার পরে সোনা পাতা দেখলে চিনতে পারবেন। চলুন এবার সোনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই। 

সোনা পাতা খাওয়ার অপকারিতা সমূহ 

আপনি যদি অনেকদিন ধরে সোনা পাতা খেয়ে থাকেন তাহলে পেটের সমস্যায় ভুগতে পারেন, যেমন ডায়রিয়া রোগীরা এবং আমাশয় রোগীরা সোনা পাতা খাওয়ার কারণে তাদের শরীরে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। অবশ্যই যাদের ডায়রিয়া এবং আমশায় রোগ আছে তারা সোনা পাতা খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
  • শিশু এবং গর্ভবতী মায়েরা সোনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এছাড়াও বয়স্করাও অতিরিক্ত সোনা পাতা খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। না হলে তাদের শরীরে সোনা পাতা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক লক্ষ্য করা যেতে পারে। 
  • ব্যথা এবং যকৃতের ক্যান্সার রোগীরা অবশ্যই সোনা পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ এসব রোগী সোনা পাতা খেলে শরীরে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। 
  • এপেন্ডিসাইডের রোগীদের সোনা পাতা না খাওয়ায় উত্তম। সোনা পাতা খাওয়ার ফলে এসব রোগীর শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
  • যাদের ব্লাড প্রেসার কম এবং অতিরিক্ত সোনা পাতা খান তারাও সাবধান হন কারণ তাদের বমি বমি ভাব হতে পারে। 
  • অনেকদিন ধরে সোনা পাতা খাওয়ার ফলে অনেক সময় শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং চোখের দৃষ্টি কমে যেতে পারে। 
  • যদি আপনি অনেকদিন ধরে সোনা পাতার গুড়া খেয়ে আসেন তাহলে আপনার শরীরে অনেক সময় বেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং হৃদ স্পন্দনের সমস্যা হতে পারে।

তাই বন্ধুরা অবশ্যই সোনা পাতা খাওয়ার আগে বা দীর্ঘদিন সোনা পাতা খেলে উপরোক্ত বিষয়গুলি অবশ্যই মনে রেখে খাবেন।

শেষ কথা ঃসোনা পাতা খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন

সোনা পাতা একটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক মহা ঔষধ। এটি শরীরের বিভিন্ন শারীরিক মানসিক এবং আধ্যাত্মিক উপকার প্রদান করে থাকে। সোনা পাতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া এবং সীমিত পরিমাণের ব্যবহার নিশ্চিত করা উচিত যাতে এর ইতিবাচক প্রভাব সর্বোচ্চ হয় এবং অপকারিতা এড়ানো যায়। 

তাহলে বন্ধুরা আশা করছি সোনা পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে জানতে পেরেছেন আমার আর্টিকেলটি পড়ে যদি উপকৃত হন অবশ্যই পরিচিতদের মধ্যে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url