থাইরয়েড রোগ-কারণ,লক্ষণ এবং নিরাময়ের ঘরোয়া উপায়
পেইজ সূচিপত্র ঃথাইরয়েড রোগ-কারণ,লক্ষণ এবং নিরাময়ের ঘরোয়া উপায়
- থাইরয়েড রোগ-কারণ,লক্ষণ এবং নিরাময়ের ঘরোয়া উপায়
- থাইরয়েড রোগের কারণ
- থাইরয়েড রোগের লক্ষণ
- থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি থাকে
- থাইরয়েড রোগ নিরাময়ে ঘরোয়া উপায়
- থাইরয়েড রোগের যে পর্যায়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত
- শেষ কথাঃথাইরয়েড রোগ-কারণ,লক্ষণ এবং নিরাময়ের ঘরোয়া উপায়
থাইরয়েড রোগ-কারণ,লক্ষণ এবং নিরাময়ের ঘরোয়া উপায়
থাইরয়েড রোগের কারণ
থাইরয়েড রোগের প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে ঃ
- জেনেটিক কারণ ঃ যদি পরিবারের কেউ থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত থাকে, তবে তার সন্তানের থাইরয়েড রোগে ঝুঁকি বেশি হতে পারে। থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা প্রায়শই বংশানুক্রমিক হতে দেখা যায়।
- অটোইমিউন রোগ ঃ হাইপোথাইরয়েডিজিম প্রায় অটো মিউন রোগের কারণ হয়। এর মধ্যে হাশিমোটাস হাইরোডাইটিস যেখানে শরীর নিজেই থাইরয়েড গ্রন্থিকে আক্রমণ করে এবং গ্রেভস ডিজিজ যেখানে শরীরের অ্যান্টিবডি থাইরয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত হরমোন তৈরি করতে প্ররোচিত করে অন্তর্ভুক্ত।
- অতিরিক্ত আয়োডিন গ্রহণ বা অভাব ঃ আয়োডিন থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত বা কম আয়োডিন গ্রহণো থাইরয়েড রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
- গর্ভাবস্থা ঃ গর্ভাবস্থায় হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে যেতে পারে বা বাড়তে পারে, যা হাইপোথাইরোডিজম বা হাইপারথাইরডিজিম সৃষ্টি করতে পারে।
- ধূমপান এবং পরিবেশগত বিষয় ঃ ধূমপান বা পরিবেশগত বিষয় যেমন বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ থাইরয়েড গ্রন্থির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
- বয়স এবং লিঙ্গ ঃ থাইরয়েড রোগ সাধারণত মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, বিশেষত ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে। এছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে থাইরয়েড সমস্যা বাড়তে পারে।
থাইরয়েড রোগের লক্ষণ
থাইরয়েড রোগের লক্ষণ রোগের প্রকারের উপর নির্ভর করে। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে যা হাইপোথায়রয়েডিজম এবং হাইথাইরয়েডিজম উভয় ক্ষেত্রেই দেখা যেতে পারে।
হাইপথায়রয়েডিজম থাইরয়েড হরমোনের অভাব
- শরীরের ওজন বাড়ানো ঃ শরীরে শক্তির অভাব এবং ক্লান্তি অনুভব হওয়া সাধারণত একটি লক্ষণ।
- একাত্ব বা ক্লান্তি ঃ শরীরে শক্তির অভাব এবং ক্লান্তি অনুভব হওয়া সাধারণত একটি লক্ষণ।
- শীতল অনুভূতি ঃ হরমোনের অভাবে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমে যায়, যার ফলে ঠান্ডা অনুভব হয়।
- ত্বকের শুষ্কতা ঃ ত্বক শুষ্ক, মসৃণ বা খসখসে হয়ে যেতে পারে।
- মনে বিষন্নতা এবং মনমরা ভাব ঃ হরমোনের অভাবে মানসিক স্বাস্থ্যেও পরিবর্তন হতে পারে, যেমন উদ্বেগ বা ভীষণতা।
- কণ্ঠস্বর পরিবর্তন ঃ কণ্ঠস্বর ভারী বা গলা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
হাইপারথাইরয়েডিজম থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত উৎপাদন
- ওজন কমে যাওয়া ঃ বিপাকের হার বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে হাওয়া সত্বেও শরীরের ওজন কমে যেতে পারে।
- হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া ঃ হৃদ যন্ত্রের গতিবেগ বের হতে পারে, যার ফলে কখনো কখনো বুক ধরফর করতে পারে।
- অতিরিক্ত ঘাম ঃ শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।
- ঘুমের সমস্যা ঃ নিদ্রাহীনতা বা কম ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
- অশান্তি ও উদ্বেগ ঃ মানসিক অশান্তি এবং উদ্বেগের অনুভূতি বাড়তে পারে।
- বেশির দুর্বলতা ঃ বেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে, বিশেষ করে হাতে ও পায়ে।
থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি থাকে
আরো পড়ুন ঃকিডনিতে পাথর হওয়ার কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার
থাইরয়েড রোগ নিরাময়ে ঘরোয়া উপায়
থাইরয়েড সমস্যা সম্পূর্ণভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিরাময় সম্ভব নয়, তবে কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা থাইরয়েড কার্যক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
- আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার ঃ থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে আয়োডিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার, যেমন সল্ট, মাছ, আল্গি,ডিম, দুধ, শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া উচিত।
- লেবুর রস এবং মধু ঃ লেবুর রস এবং মধু একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া বাড়তে পারে এবং এটি থাইরয়েডের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম পানির সাথে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
- আয়রন সমৃদ্ধ খাবার ঃ আইরন হরমোনের উৎপাদনে সহায়ক। পালং শাক, টমেটো, মাংস এবং ডাল আয়রন সমৃদ্ধ খাবার।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ঃ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যেমন সেটি মাছ (স্যালমন, মাকি, টুনা), চিয়া,স্পীড এবং আখরোট, থাইরয়েডের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য উপকারী হতে পারে।
- যতটা সম্ভব স্ট্রেস কমানো ঃ মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ থাইরয়েড এর কার্যকারী তাকে প্রভাবিত করতে পারে। ধ্যান, যোগব্যায়াম এবং প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্ট্রেস কমানোর চেষ্টা করুন।
- পর্যাপ্ত ঘুম ঃ ভালো ঘুম থাইরয়েডের কার্য ক্ষমতা পুনস্থাপন করতে সাহায্য করতে পারে। দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন।
- সূর্যের আলো ঃ সূর্যের আলোর মধ্যে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, যা থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক। তাই দিনে কিছু সময় সূর্যের আলোর মধ্যে কাটানো উচিত।
- বেশি বেশি পান ঃ শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখা থাইরয়েডের স্বাভাবিক কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে।
- তুলসী ঃ তুলসী পাতায় প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট কোন রয়েছে যা থাইরয়েডের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
থাইরয়েড রোগের যে পর্যায়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত
- হতাশ,নার্ভাস অনুভব করা ডিপ্রেশন অথবা মেজাজ পরিবর্তন।
- গলার ভয়েস বক্সের দুই সাইডে ফলা প্রিন্টের মতো অনুভব করলে।
- বেশি সময় ধরে গরম অথবা শীত অনুভব হলে।
- অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করলে।
- হঠাৎ করে ওজন বেশি হওয়া অথবা কমে গেলে।
শেষ কথাঃথাইরয়েড রোগ-কারণ,লক্ষণ এবং নিরাময়ের ঘরোয়া উপায়
থাইরয়েড রোগ একটি অত্যন্ত সাধারণ কিন্তু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। যদিও ঘরোয়া উপায় গুলি থাইরয়েড এর কার্যক্ষমতা সাময়িকভাবে উন্নত করতে সহায়তা করে থাকে। তবে ফায়ার এর রোগ নিরাময় একমাত্র প্রভাবশালী উপায় হল চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা।
থাইরয়েড রোগের শুরুর দিকে সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন ঘটালে দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতা অর্জন করা সম্ভব। সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন শরীরে যত্ন নেবেন আমার আর্টিকেলটি পড়ে যদি ভালো লাগে তাহলে পরিচিত জনদের মাঝে শেয়ার করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url