কলা খাওয়ার ২০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
কলা খাওয়ার ২০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে কি জানেন। আজকে
আর্টিকেলে আমি আপনাদের সামনে কলার ২০ উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত
তুলে ধরব।
কলা আমাদের দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি বারো মাসি ফল। বা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য
খুবই উপকারী চলুন আজকে কলার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কলার খোসার ব্যবহার সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নিন এই আর্টিকালের মাধ্যমে।
পেইজ সূচিপত্র:কলা খাওয়ার ২০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
কলা খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
কলাকে বলা হয় প্রাকৃতিক শক্তির প্রধান উৎস। কলা এমন একটি ফল, যা সুস্বাদু ও
পুষ্টিকর হওয়ার কারণে আমাদের অনেকের প্রিয়। প্রতিদিন একটি কলা খেলে শারীরিক
স্বাস্থ্যের অনেক উপকারিতা লাভ করা যায়।
তবে এর উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা ও খাওয়ার নির্দিষ্ট নিয়মও রয়েছে, যা
যারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকে ব্লগে আমরা কলার স্বাস্থ্য উপকারিতা, এতে
ভিটামিন, অপকারিতা এবং কলা খাওয়ার নিয়ম নিয়ে এ ব্লগে বিস্তারিত আলোচনা।
কলা খাওয়ার ২০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
কলা একটি প্রাকৃতিক ভিটামিন সম্পন্ন ফল। কলা আমাদের দেশে খুব সহজ লব্য। আজকে আমরা
কলার বৃষ্টি স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব। চলুন জেনে নেয়া যাক করার
বৃষ্টি স্বাস্থ্য উপকারিতা।
- শক্তি বাড়ায় ঃ কলাতে উচ্চ পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা দ্রুত শরীরে শক্তি যোগান দেয়। এটি শরীরের জন্য একটি আদর্শ প্রাকৃতিক শক্তির উৎস।
- হজমে সাহায্য করে ঃ কলা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পূর্ণ, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়তা করে। এটি পাচনতন্ত্রের জন্য উপকারী এবং বদহজমের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
- হৃদরোগ প্রতিরোধ ঃ কলাতে থাকা পটাশিয়াম হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় ঃ কলাতে ফাইবার বেশি থাকার কারণে এটি কষ্টকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং মলত্যাগের প্রক্রিয়া সহজ করে।
- মাংসপেশীর উন্নতি ঃ কলাতে থাকা পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম মাংসপেশির সংকোচন ও সম্প্রসারণে সহায়তা করে, যা শারীরিক শক্তির উন্নতি ঘটায়।
- মানসিক শান্তি ঃ কলাতে থাকা ট্রিটটোফান হরমোনের মাধ্যমে শ্যারোটোনিন উৎপাদন বৃদ্ধি করে, যা মনে শান্তির ও সুখের অনুভূতি তৈরি করে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে ঃ কলা থেকে দীর্ঘ সময় পেট ভর্তি থাকে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া কমে যায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ ঃ কলাতে থাকা ফাইভার রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
- কিডনি সুস্থ রাখে ঃ পটাশিয়ামের উপস্থিতি কিডনি কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি কমায়।
- ত্বকের জন্য উপকারী ঃ করাতে থাকা ভিটামিন সি ত্বককে উজ্জ্বল এবং সুন্দর রাখে। এটি ত্বকের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে এবং বার্ধকের লক্ষণ কমায়।
- শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা কমায় ঃ কলা শ্বাসনালীর রোগ, যেমন হাঁপানি বা অ্যাজমা, কমাতে সহায়ক হতে পারে।
- অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে ঃ কলা অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং গ্যাস্ট্রিক আলসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
- শরীরের তাপমাত্রা কমায় ঃ গরমে কলা খেলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সতেজ অনুভব করা যায়।
- রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে ঃ কলা আমাদের শরীরে রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে। এতে থাকা প্রচুর আয়রন যার রক্তের হিমোগ্লোবিন স্তর বাড়াতে সাহায্য করে।
- চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে ঃ কলায় ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন থাকে যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।এটি রাতকানা,অন্ধত্ব এবং অন্যান্য চোখের প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
- মানসিক চাপ কমায় ঃ কলা আমাদের শরীরে মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে কলায় থাকা তীব্র ফ্যান মনকে শান্ত করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে ঃ গলাতে রয়েছে কম ক্যালরি এবং বেশি ফাইবার, যা দীর্ঘ সময় তৃপ্তি বজায় রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছা কমিয়ে দেয়।
- স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ঃ কলা আমাদের শরীরের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে কলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- আমার মনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে ঃ কলা আমাদের স্মরণে হরমোনের পরিমাণ ঠিক রাখতে সহায়তা করে ভিটামিন বি সিক্স হরমোন ভার্সন রক্ষা করে এবং পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
- আনসার প্রতিরোধে ঃ ক্যান্সার প্রতিরোধে কলার ভূমিকা অপরিসীম কলায় থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি রোধ করে যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- কিডনি ভালো রাখতে ঃ কলাতে পটাশিয়াম থাকার কারণে, এটি কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এটি কিডনি সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।
- ত্বকের সুরক্ষায় ঃ কলার ত্বকের জন্য একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কাজ করে এর ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং মলিনতা দূর করতে সাহায্য করে।
- হাড় ভালো রাখতেঃ বলার মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়কে শক্তিশালী করে তোলে এবং অস্টিওপরসিসের ঝুঁকি কমায়।
- মানসিক শক্তি উন্নত করতে ঃ কোথায় থাকা ভিটামিন বি৬ এবং ট্রিপটোফ্যান দুঃখ-কষ্ট কমায় এবং মানসিক শান্তি দেয়।
- নিউরোলজিক্যাল স্বাস্থ্যের উন্নতি ঃ গলায় থাকা ম্যানগানিজ এবং ফসফরাস মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়তে সহায়তা করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ঃকলাতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, যার যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
- শক্তিশালী প্রতিরোধক ক্ষমতা ঃ কলাতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
- পেটের গ্যাস ও ফোলা ভাব কমানো ঃ কলা পেটের গ্যাস এবং ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে।
কলায় যে সকল ভিটামিন থাকে
কলা একটি পুষ্টিকর ফল যা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানের সমৃদ্ধ। চলেন
আজকে আমরা কলার ভিতর থাকা প্রধান প্রধান ভিটামিন গুলো নিয়ে আলোচনা করি ঃ
ভিটামিন সি ঃ কলাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা আমাদের
শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে ত্বক সুস্থ রাখে এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট
হিসেবে কাজ করে থাকে।
ভিটামিন বি৬ ঃ কলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন b6 থাকে যা মস্তিষ্কের
কার্যক্রমে সাহায্য করে। স্নায়ুতন্ত্র সুস্থ রাখে এবং রক্তের হিমোগ্লোবিন স্থল
বাড়াতে সাহায্য করে।
ভিটামিন এ ঃ কলাতে ভিটামিন এ (বিটা ক্যারোটিন) কিছু পরিমাণে থাকে যা
চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এবং রাতকানা রোদ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ভিটামিন বি৯ঃ কলায় ভিটামিন বি9 থাকে যা গর্ভাবস্থায় মা
সন্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন বি ২ঃ কলাতে ভালো পরিমাণে ভিটামিন বি টু থাকে। যা শক্তির উৎস এবং
কোষের বৃদ্ধির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
ভিটামিন বি৫ঃ এটি শরীরের শক্তি উৎপাদন এবং হরমোন সিস্টেমের কার্যক্রম
বজায় রাখতে সাহায্য করে।
উপরোক্ত ভিটামিন গুলি কলার পুষ্টির একটি বড় অংশ যার শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমের
সহায়তা এবং সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে।
আরো পড়ুনঃখেজুর খাওয়ার ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
কলা খাওয়ার অপকারিতা
যদিও কলা স্বাস্থ্যকর, তবে এর কিছু অপকারিতা হতে পারে ঃ
অতিরিক্ত খেলে গ্যাস ও পেট ফাঁপা হতে পারে ঃ অনেক বেশি কলা খেলে পেটের মধ্যে
গ্যাস সৃষ্টি হতে পারে।
- ওজন বাড়ানোর ঝুঁকি ঃ কলায় প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে, যা অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।
- ব্লাড সুগারের মাত্রা বাড়ানো ঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অতিরিক্ত কলা খাওয়া ক্ষতির কারণ হতে পারে, কারণ এটি ব্লাড সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
- এলার্জি সমস্যা ঃ কিছু মানুষ করার প্রতি অ্যালার্জি প্রদর্শন করতে পারে, যা ত্বকে রেশ, শ্বাসকষ্ট বা পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- কিডনি রোগীদের জন্য ঝুঁকি ঃ কিডনি রোগীদের জন্য পটাশিয়ামের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কলায় পটাশিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে।
- পেটের অসস্তি ঃ অতিরিক্ত কলা খাওয়ার কারণে পেটে অস্বস্তি, পেট ফাঁপা বা অম্বলের সমস্যা হতে পারে।
- তেলের শোষণ ঃ কলা তেলের শোষণ করতে পারে, যা কিছু মানুষকে অস্বস্তি বা শরীরের মেদ বৃদ্ধি করতে সহায়ক হতে পারে।
কলার খোসার উপকারিতা
কলা খোসা সাধারণত আমরা ফেলে দিই, কিন্তু এটি শরীরে জন্য বেশ উপকারি। চলুন এবার
কলার খোসার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ঃ
- ত্বকের যত্ন ঃ কলার খোসা ত্বকের পুষ্টি বাড়াই এবং ময়েশ্চার্জিং প্রভাব ফেলে। এটি ত্বকের রিংকলস কমাতে সহায়তা করে।
- মুঠোফোন স্কিন পরিষ্কার ঃ কলার খোসা দিয়ে আপনি আপনার মুঠোফোন বা ল্যাপটপের স্কিন পরিষ্কার করতে পারেন, কারণ এতে থাকা পটাশিয়াম স্কিন দাগ দূর করতে সহায়তা করে।
- দাঁতের সুরক্ষা ঃ কলার খোসার ভেতরের অংশ দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত সাদা এবং শক্তিশালী হয়।
- চোখের ফোলা কমাতে ঃ কলার খোসার ভেতরের অংশ চোখের চোখের ফোলা বা অন্ধকার দাগ কমাতে সহায়ক।
- মাছির দূরীকরণে ঃ কলার খোসা কিছু প্রাকৃতিক উপায়ে ঘর বা বাড়ি থেকে মাছি দূর করতে সহায়তা করে।
- পাথরের দাগ পরিষ্কার ঃ কলা খোসা দিয়ে আপনি কিছু কঠিন দাগ যেমন পাথরের দাগ বা লৌহ দাগ পরিষ্কার করতে পারেন।
শেষ কথা ঃকলা খাওয়ার ২০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
কলা আমাদের দৈনিন্দন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হতে পারে, তবে এটি খাওয়ার সময়
কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কলার উপকারিতা যেমন অসংখ্য, তেমনি এর কিছু
অপকারিতা রয়েছে।কলার খোসাও আমাদের জন্য অনেক উপকারী, তবে এটি ব্যবহার করতে হলে
কিছুটা সচেতনতা জরুরী।
সঠিক পরিমাণে কলা খেলে এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি আপনার স্বাস্থ্য
উপকারিতা গুলি পুরোপুরি উপভোগ করতে পারবেন। আশা করছি আমার এই ব্লগে কলার ২০ টি
উপকারিতা এবং অপকারিতা ও কলার খোসার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে উপকৃত হবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url